Tuesday, October 31, 2017

জগদ্ধাত্রী পুজো যেন প্রকৃতই সবাইকে অহংকার শুন্য করে।

পুজার দিনগুলে বেশ ভালই কাঙ্ক্ষিত দিনের মত  যাচ্ছিল। কিন্তু,  দশমীর দিনে হঠাৎ করে অস্বস্তি।  অশুরধর্মী দু' একটা বদ ছেলে অযথাই গা ঘেষতে চাচ্ছে,  ছোয়া লাগাতে চাচ্ছে - তবে অালতির মানসে নয়। বিসর্জনে অন্য সবার মত অার নদির ঘাটে যাওয়া হয় না। পরের দিন সকালে পুকুর ঘাটে অযথাই একজনের অপ্রয়োজনীয় শব্দে গলা কফের নোংরা চর্চা আর পুকুরের পানিতে বিশ্রী রকম ছিটাছিটি। এক সাদা পাঞ্জাবীলা  প্রস্রাব শেষে লিঙ্গটা ধরে ঘাটে পরিস্কার হচ্ছে। তার নোংরা ধর্মের নামটা লিখলে অাবার অনুভুতিতে অাঘাত হতে পারে। পানি দিয়ে মানুষ পরস্কার হয়, কিন্তু পরিস্কার হতে গিয়ে বদ্ধ পানি নোংরা করা নোংরাদেরই কাজ। কারো সাধ্য অাছে কি জল পরিস্কার করার? কে পারে পুকুর থেকে নোংরা জল টুকু অালাদা করতে? তবে মা'য়ের ইচ্ছাতেই গঙ্গা পুজা/ঘাট পুজা দিতে এলেন কয়েকজন হিন্দু। মোমবাতি, অাগরবাতি জ্বেলে, ফুল দিয়ে শুকনো ডালায় পনিতে ভাসিয়ে দেয়া। ও গুলো পানিতে ভেসে বেড়াচ্ছে এবং গন্ধ অার উত্তাপ ছড়াচ্ছে।  কিছুক্ষণ আগে অসাধ্য মনে হচ্ছিল , কিন্তু নোংরা গুলো হয়ত অাগুনের তাপে অাস্তে অাস্তে ধোয়া হয়ে নোংরাদের পানীয় হিসাবেই কোথাও অপেক্ষা করছে।
একজনে এসে বলে, সামনে জগদ্ধাত্রী পুজা, এবার জগদ্ধাত্রী পুজা হবে। মন্দিরে তো অার থাকতে পারবেন না। ছোট একটা শিশু ছেলে বলে, ক্যা?  থাকলে কি হবে? দর্গা পুজা, কালি পুজা সব পুজায় থাকবে। ইচ্ছা ছিল গতবছরের মত কালী পুজায় থাকা এবং প্রসাদ গ্রহন করার। কিন্তু সন্ধায় কাজ সেরে মন্দিরে অাসার পথেই অশুরের শিকার। তারা পথ অাগলে দেয়, মারধর  করে- খুব নীচু শ্রেণীর লোক ছিল তারা - পুলিশ গিয়ে ভুক্তভোগীকে হাতকড়া পরায়। মারধর করে, পাসওয়ার্ডের জন্য নির্যাতন করে। তবে জীবনের ভাল দিনগুলোর কয়েকটি দিন কাটে জেলে। সেখানে মানুষগুলো সম্মান করতে জানে, ভাল মন্দের তফাৎ বুঝে, কুৎসা রটনাকারীদের বেপারেও সচেতন ছিল। ভোটের জন্য নোংরা ধর্মের স্বার্থ ব্যবহারকারী দলের গুটিকয়েক লোভীর মত মহিষ সেখানে চোখে পরেনি। সব থেকে বড় বিষয়, সেখানে প্রতিটা মানুষকেই সেখানে মিথ্যা মুক্ত মনে হয়েছে। কয়েদীরা বুঝি মিথ্যা পছন্দ করেন না, কিন্তু ঐ নোংরা রাজাকারী ধর্মের কয়েকটি মানুষ অার তাদের প্রশাসন জেলের বাহিরে তা করে চলছে। ঐ হীন ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশেষ কোন একটি মহলের তৈরি করা অসত্য, মিথ্যা, অপমানকর প্রতিবেদনটি মূলত: তাদের কুৎসা রটানোরই প্রয়াস। অার ঐ রকম কুৎসায় যারা ঠোট মিলায় তারা মূলত: প্রডাক্ট অব হুইসপারার হয়ে যায়। তার পরেও তারা হয় কারন, তাদের পরিবারের এবং তাদের ধর্মের মেয়েরা বিয়ের অাগেই সতীত্ব হারায় - তা গোপন করাটা তাদের নিয়ম। তাদের পর্দা যেন অনেকটা: বিয়ে ছাড়া  ঢেকে রাখা হারানো সতীত্বের পরিচয়।

মহিষাসুর বধের সাথে সাথে হস্থীরূপ অশুর বিনাশে জগদ্ধাত্রৌ মাতার পুজার অায়োজন হচ্ছে। কিন্তু সমাজে চামচিকাও রয়েছে। জেল লাইব্রেরীতে একটি বই পড়াতে শুরু করা।  কয়েকটি পাতা উলটানোর মধ্যেই পরিচয় মেলে কাজীদের। অতটা নোংরা ষড়যন্ত্র বিশ্বাস করা কঠিন। কিন্তু মনে পরে, ২/৩ দিন আগে যে কাজীরা পথরোধ করে হঠাৎ অাঘাত শুরু করে তারা শুধু কিছুদিন পূর্বে মন্দির থেকে পোষাক/ মোবাইল/ মোবাইল সরঞ্জাম চুরি/ নষ্ট করার ঘটনায় জড়িত নয়, তারা প্রায় বিশ বছর অাগে এলাকার পরিচিত সুবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে রাতে থাকতে চায়, কিন্তু তৎক্ষণাৎ বিতাড়িত হয়। কারাণ, তারা তাদের ঢাকা ভ্রমণের অাসল উদ্দেশ্য শিবির নামের সংগঠনে যোগ দেয়ার বিষয় গোপন করে। তারা ঐ সংগঠনের অপততপরতার সাথে যুক্ত ছিল বিধায় সেখানে অতিথির মর্যাদা পেতে ব্যর্থ হয়। তারা মন্দির প্রাঙ্গণে ঐসব অাচরণ করে যাতে মানুষ হিন্দুদের দোষারোপ করে। সুযোগ পেল ওরা ভয়ংকর বিশ্বাসঘাতক। চামচিকাধর্মী ঐ রাজাকার কাজী গুলো অাসলে কি - বৈশিষ্ট্যে মহিষাসুর না হস্থী অশুর?

যতটুকু জানা যায়, দেবতারা অনেকটা চিন্তামুক্ত; নিজেদের বেশ ক্ষমতাবান ভাবতে শুরু করেন। মা' দুর্গা এসেছিলেন, অশুরগুলো সব বধ করা হয়ে গেছে, কাজেই বিপদ বুঝি শেষ। তারা নাকি অনেকটা অহংকারী হয়ে উঠেন। মহিষাসুর বধ করা হয়ে গেছে, ম' দুর্গা চলে গেছেন দশমীর বিসর্জনে। কাজেই এখন তাঁরাই শ্রেষ্ঠ। পরমেশ্বর ব্রম্মা তখন মর্তে অাসেন। এই শিক্ষা দিতে যে দেবতারা যে শক্তিতে নিজেদের শক্তিমান মনে করেন তা অসলে তাদের নিজেদের নয়, সকল ক্ষমতার উৎসই জগৎ মাতা। অশুর বধ করা হয়েছে, কিন্তু তাতে দেবতাদের অহংকার করার সুযোগ নেই। তাদের দায়িত্ব কর্তব্যে উদাসীন হবার সুযোগ নেই। মহিষাসুরের পরে হস্থীরূপ অশুর যেন মানুষের অনিষ্ঠের কারণ না হয়। হস্থীরূপ অশুরকেও জব্দ করতে হবে। বায়ুর দেবতা ব্রম্মাকে বলেন, তিনি পাহার-পর্বত, গাছপালা সবকিছু ছুড়ে ফেলতে পারেন। ব্রম্মা একটুখানি তৃণলতা বা ঘাস দেখিয়ে বায়ুর দেবতার ক্ষমতা দেখতে চান। সে সবকিছু উপড়ে ফেলতে পারে ঠিকই, কিন্তু ঘাসটুকুর কিছুই করতে পারল না। একে একে অগ্নির দেবতা এবং অন্য দেবতারাও ব্যর্থ হল। তখন তারা বুঝতে পারলেন যে তাদের ক্ষমতা  অাসলে তুচ্ছ্ব। সকল ক্ষমতা মূলত: জগত মাতার। তারা তখন জগৎ মা' দুর্গারই অন্যরূপ জগদ্ধাত্রী মাতার কাছে নত হন। নিকট অতীতের ইতিহাস বলে, একজন রাজা ব্রিটিশ বিরোধী বিধায় পুলিশের কাছে বন্ধী হন। দশমীতে তিনি মুক্ত হন, কিন্তু ততক্ষণে মা' দুর্গার বিসর্জন হয়ে যায়। একবছর অপেক্ষার প্রহর না গুনে রাজা কার্তিকের দশমীতে শাস্ত্রমতে জগদ্ধাত্রী পুজার অায়োজন করেন। মা'য়ের ভক্তরা দিকভ্রান্ত হন না। এ পুজা যারা করেন, তারা নাকি সত্যই অহংকারশুন্য হন।


No comments:

Post a Comment

It's better to comment here.
Don't whisper wrong thing to misguide the people on road.